মুক্তকলম ২৪

ইসরায়েলের বিমান হামলায় তেহরানে আতঙ্ক ও অস্থিরতা: fear in Tehran after Israel bombs

ইসরায়েলের বিমান হামলায় তেহরানে আতঙ্ক ও অস্থিরতা


ইসরায়েলের বিমান হামলায় তেহরানে আতঙ্ক ও অস্থিরতা: fear in Tehran after Israel bombs
ইসরায়েলের বিমান হামলায় তেহরানে আতঙ্ক ও অস্থিরতা: fear in Tehran after Israel bombs

১৩ জুন ২০২৫ তারিখ ভোররাতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তেহরানের সবচেয়ে জনবহুল এলাকাসমূহে বিস্ফোরণ ঘটে এবং ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। মর্জদালান, সাদাতাবাদ ও উত্তর তেহরানের অন্যান্য আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

এই আক্রমণে নিহত হয়েছেন আইআরজিসি বিমান বাহিনীর প্রধান হোসেইন সালামী, স্থলবাহিনী প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, এইচআরজিসি কৌশল বিভাগের পদস্থ কর্মকর্তা আমির আলি হাজিজাদেহ এবং প্রখ্যাত পারমাণবিক বিজ্ঞানী ফেরৈদূন আব্বাসি ও মোহাম্মদ তারাঞ্জি। মোট নিহতের সংখ্যা আনুমানিক ৬৬ থেকে ৭৮ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৩২০ জন।

ইসরায়েল দাবি করেছে, এটি একটি “অগ্রিম প্রতিরোধমূলক” বিমান অভিযান ছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস করা। আল-জাজিরার মতে, ১৯৮০–৮৮ সালের ইরান–ইরাক যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে এই প্রথমবার তেহরানে সরাসরি আবাসিক এলাকায় এমন হামলা চালানো হলো, যা তেহরানবাসীর মধ্যে মারাত্মক আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।

ইসরায়েলিরা নতান্জ, তাবরিজ, ইসফাহান, আরাক, খেরমানশাহ এবং হামাদানসহ বিভিন্ন পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে। স্পুটনিক আর্ন্টি ওয়াচডগ জানিয়েছে, হামলায় পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর রেডিয়েশন বা বিকিরণ বিপর্যয় ঘটেনি।

ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তেহরানের তেল পাম্পে লম্বা লাইনের ছবি ভাইরাল হয়। স্থানীয় প্রশাসন ইন্টারনেট সেবা সীমিত করে এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম স্থগিত করে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনেই এই “রক্তাক্ত ও ক্ষতিকর হামলার” তীব্র নিন্দা জানিয়ে “দীর্ঘ ও কঠোর প্রতিশোধ” নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

হামলার পর ইরান ১০০–২০০টি ড্রোন ইসরায়েলের দিকে ছুঁড়েছে বলে জানা গেছে, যার অধিকাংশই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আটকাতে সক্ষম হয়েছে। ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ করে এবং হাজার হাজার সৈন্য মোতায়েন করে।

যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, এই হামলায় তারা সরাসরি অংশ নেয়নি, তবে তারা ইসরায়েলের ‘উদ্যোগ’ সম্পর্কে আগে থেকেই অবহিত ছিল। এই পরিস্থিতি ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনা প্রক্রিয়াকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করতে পারে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেক নেতা তাৎক্ষণিকভাবে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এক জরুরি বৈঠকের আয়োজন করেছে।


📝 সারসংক্ষেপ:

  • কেন হামলা: ইসরায়েল জানায়, এগুলো ছিল অগ্রিম প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ যাতে ইরান পারমাণবিক ক্ষমতা অর্জন করতে না পারে।
  • হামলার লক্ষ্য: তেহরান ও পারমাণবিক কেন্দ্র — নতান্জ, তাবরিজ, ইসফাহান, আরাক, খেরমানশাহ।
  • মানবিক ক্ষয়ক্ষতি: বেশ কিছু আবাসিক ভবন ধ্বংস, শীর্ষ সামরিক ও বৈজ্ঞানিক ব্যক্তিসহ বহু মানুষ নিহত।
  • ইরানের প্রতিক্রিয়া: তারা দ্রুত প্রতিশোধের অঙ্গীকার করেছে এবং ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
  • আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি: মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে, আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা প্রবল।
  • কূটনৈতিক প্রভাব: ইরান–যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, বিশ্বনেতাদের পক্ষ থেকে শান্তির আহ্বান।

সংবাদ উৎস: আল-জাজিরা, স্পুটনিক, রয়টার্স

ইসরায়েল ইরান যুদ্ধ, ইরান পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস, তেহরান বোমা হামলা, ইসরায়েল বিমান হামলা, আলজাজিরা বাংলা রিপোর্ট, ১৩ জুন ২০২৫ খবর, মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ ২০২৫, ইরান প্রতিশোধ হামলা, আয়াতোল্লাহ খামেনেই প্রতিক্রিয়া

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন
মুক্তকলম ২৪

📢 মুসলিম বিশ্বের সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ জানতে নিয়মিত ভিজিট করুন মুক্তকলম২৪
আমাদের
ফেসবুক পেজটেলিগ্রাম চ্যানেল-এ যুক্ত থাকুন আজই!