২০২৫ সালের কুরবানির নিসাব: সোনা ও রূপার বর্তমান বাজারদরে কার ওপর কুরবানি ওয়াজিব?
আজকের বাজারমূল্যে কুরবানির নিসাবের সঠিক পরিমাণ জেনে নিন
পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর জন্য ত্যাগ ও তাকওয়ার অন্যতম নিদর্শন। ইসলামী শরিয়তে কুরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যা নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করলে ওয়াজিব হয়। এর জন্য নির্ধারিত রয়েছে ‘নিসাব’— অর্থাৎ প্রয়োজনের অতিরিক্ত নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে কুরবানি ওয়াজিব হয়ে যায়।
![]() |
২০২৫ সালের কুরবানির নিসাব কত? আজকের রূপার দাম অনুযায়ী সর্বশেষ হিসাব জানুন |
কাদের ওপর কুরবানি ওয়াজিব?
- মুসলমান হতে হবে
- বালেগ (প্রাপ্তবয়স্ক) হতে হবে
- আকিল (বুদ্ধিমান) হতে হবে
- মুকিম (নিজ শহরে অবস্থানরত) হতে হবে
- ঈদের তিন দিনে নিসাব পরিমাণ প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ থাকতে হবে
কুরবানির নিসাব কী?
ইসলামী বিধান অনুযায়ী কুরবানির নিসাব হলো:
- সোনা ভিত্তিক: ৭.৫ ভরি (প্রায় ৮৭.৪৮ গ্রাম)
- রূপা ভিত্তিক: ৫২.৫ ভরি (প্রায় ৬১২.৩২ গ্রাম)
সাধারণত রূপার নিসাব অনুযায়ী কুরবানির হিসাব করা হয়, কারণ এটি তুলনামূলকভাবে কম এবং গরিবদের জন্য সহায়ক।
আজকের (২৭ মে ২০২৫) সোনা ও রূপার বাজারদর অনুযায়ী নিসাবের হিসাব
- রূপার দাম (২২ ক্যারেট): ২,৮১১ টাকা প্রতি ভরি
হিসাব: ৫২.৫ × ২,৮১১ = ১,৪৭,৫৫৭.৫০ টাকা - সোনার দাম (২২ ক্যারেট): ১,৬৮,৯৭৬ টাকা প্রতি ভরি
হিসাব: ৭.৫ × ১,৬৮,৯৭৬ = ১২,৬৭,৩২০ টাকা
রূপা না সোনা—কোনটি ভিত্তি ধরা উচিত?
যেহেতু রূপার নিসাব কম এবং দরিদ্রদের উপকারে আসে, তাই অধিকাংশ ফিকহবিদগণ কুরবানির ক্ষেত্রে রূপার নিসাব গ্রহণ করার পরামর্শ দেন। তাই যাদের সম্পদ রূপার নিসাবের সমপরিমাণ বা বেশি, তাদের ওপর কুরবানি ওয়াজিব হবে—even যদি সোনার নিসাব পূরণ না করে। ✅ যদি কারো নিকট স্বর্ণালঙ্কার ৭.৫ ভরি বা তার বেশি থাকে তাহলে সোনার নিসাব হিসাব করবে।
যে সম্পদ নিসাবে গণ্য হয়:
- নগদ টাকা
- সোনা ও রূপা
- ব্যবসার মালপত্র
- প্রয়োজনের অতিরিক্ত আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক ডিভাইস
- অপ্রয়োজনীয় জমি বা ফ্ল্যাট
- নারীদের অলংকার
নারীদের ওপর কুরবানি ওয়াজিব কি?
হ্যাঁ। যদি কোনো নারীর গহনা বা সম্পদের পরিমাণ নিসাব অতিক্রম করে এবং তা প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয়, তাহলে তার ওপরও কুরবানি ওয়াজিব হবে।
উপসংহার
২০২৫ সালের কুরবানির রূপা ভিত্তিক নিসাব দাঁড়ায় প্রায় ১,৪৭,৫৫৮ টাকা এবং সোনা ভিত্তিক নিসাব দাঁড়ায় প্রায় ১২,৬৭,৩২০ টাকা। তবে অধিকাংশ আলেম ও ফিকহ বিশারদদের মতে, রূপার নিসাব অনুযায়ী হিসাব করাই উত্তম।
সুতরাং, ঈদের দিনগুলোতে যদি আপনার মালিকানায় এই পরিমাণ বা তার বেশি প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ থাকে, তাহলে আপনার ওপর কুরবানি ওয়াজিব।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যথাযথভাবে পালনের তাওফিক দিন। আমিন।