গাজায় প্রতিবন্ধী দুই বোনের করুণ কাহিনী কাঁপিয়ে দিলো বিশ্বকে
🕒 প্রকাশিত: ৩ জুন ২০২৫ | ✍️ প্রতিবেদক: আসেম আল জারজাভি |
📍 অবস্থান: শাতি শরণার্থী ক্যাম্প, গাজা
![]() |
গাজায় প্রতিবন্ধী দুই বোনের কাহিনী কাঁপিয়ে দিলো বিশ্বকে |
একটি গরমে হাঁসফাঁস করা তাঁবুর ভেতরে, শাতির অস্থায়ী শরণার্থী শিবিরে, ৩০ বছর বয়সী রানিম আবু আল-আইশ দিনরাত সেবা করে যাচ্ছেন তার দুই প্রতিবন্ধী বোন – আসিল (৫১) এবং আফাফ (৩৩)-এর।
এই দুই বোনের রয়েছে সিলিয়াক রোগ এবং মানসিক প্রতিবন্ধকতা। শব্দ, ভিড় বা পরিবেশের সামান্য পরিবর্তনই তাদের জন্য হয়ে ওঠে অসহ্য।
রানিম বলেন, “মানুষ দেখে মনে করে ওরা সুস্থ, কিন্তু ওরা নয়। ওরা হাসে, কাঁদে, হঠাৎ চিৎকার করে ওঠে। কেউ কেউ ঠাট্টা করে, যা তাদের খুব কষ্ট দেয়।”
তাঁবুতে মোট ৭ জনের ঠাসাঠাসি জীবন। রানিমের বৃদ্ধ মা-বাবা এবং আরেক বোন ও তার স্বামীও থাকেন এই তাঁবুতে। রানিমের বাবা আহত, মা অসুস্থ। সব দায়িত্ব একা রানিমের ওপর।
এক সময় ছিল ঘর, এখন শুধু তাঁবু
তারা একসময় বাস করতেন জাবালিয়ার ব্লক ২-তে। আট মাস আগে ইসরায়েলি হামলায় ঘর ভেঙে গেলে শুরু হয় শরণার্থী জীবন। ঘর থেকে স্কুল, স্কুল থেকে রাস্তায় – এখন তাঁবু।
🔥 দিনে তাঁবুর ভেতর দম বন্ধ হয়ে আসে, আর রাতে হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা। খাবার নেই, ওষুধ নেই, নিরাপত্তা নেই।
সবচেয়ে বড় ক্ষতি: মোহাম্মদের গ্রেপ্তার
রানিমের ২২ বছর বয়সী ভাই মোহাম্মদ ছিল পরিবারের আশ্রয়। ওষুধ, হাসপাতাল, ত্রাণ – সবই সে দেখাশোনা করত।
গত অক্টোবরে কামাল আদওয়ান হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ইসরায়েলি বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর থেকে নিখোঁজ।
গ্লুটেন-মুক্ত খাবারের সংকট
আসিল ও আফাফ গ্লুটেন সহ্য করতে পারে না। কিন্তু গাজায় এখন প্রধান খাবারই গমের রুটি। বিশেষ খাবার নেই, যেটুকু আসে তাও অনেক দেরিতে বা দামে পাওয়া যায় না।
প্রতিদিনের লাঞ্ছনা
সাধারণ টয়লেট ব্যবহারেও ভোগান্তি পোহাতে হয়। “মানুষ হাসে, কটু কথা বলে। ওরা ভেঙে পড়ে,” বলেন রানিম।
চিকিৎসা নেই, সাহায্য নেই
আগে নিয়মিত চিকিৎসা পেতেন আসিল ও আফাফ। এখন যুদ্ধ ও অবহেলায় তা বন্ধ। এক মনোবিজ্ঞানী বলেন, “গাজায় প্রতিবন্ধীদের প্রতি সহানুভূতির চরম অভাব দেখা যাচ্ছে।”
‘আমরা শুধু একটু বোঝাপড়া চাই’
প্রতিদিন রানিমকে নতুন করে মানুষকে বোঝাতে হয় – “ওরা ভিন্ন, ওরা প্রতিবন্ধী, ওদের সহানুভূতি দরকার।”
📌 রানিমের আকুতি: “ওরা শুধু যুদ্ধের শিকার নয়। ওরা এমন মানুষ – যাদেরকে বিশ্ব ভুলে গেছে।”
✅ শেয়ার করুন যাতে সবার চোখে পড়ে এই নীরব আর্তনাদ।
🔗 Source: Al Jazeera